Monday 20 August 2018


ইলিশ উৎসব ২০১৮


আবার আমরা ইলিশ উৎসব পালন করছি, যে কোন বয়সের মানুষের জন্য। ১৬ই সেপ্টেম্বর, রবিবার। অনুষ্ঠান হচ্ছে আমাদের অশোকনগরে (হাবড়া, উঃ ২৪ পরগনা, বারাসাত থেকে ২২ কিমি) প্রবীণদের আবাসনে। সকাল ১০টা থেকে শুরু। মাঝে দু বছর ‘ধেৎ তেরি ভাল্লাগে না’ বলে বন্ধ ছিল। এবার আবার সবার বায়না, ‘করতেই হবে’। চল নেমে পড়া যাক। ইলিশ উৎসব না ছাই, পেট পুরে ঝালে ঝোলে অম্বলে এমনি এমনিই ইলিশ খাওয়া। বাংগালী কি বাড়িতে ইলিশ খায় না? বর্ষায় গলিতে গলিতে হাঁটলেই জিভে জল আনা গন্ধ। কিন্তু বাড়িতে তো এক পিস বড় জোর দু পিস – তাও দু পদ নয়। বেশী রকম পদ চাইলেই গৃহ যুদ্ধ। আমরা সাত রকম ইলিশের পদ করছি। আপনারা অনেকেই বলবেন এত পদ খাওয়া যাবে না। উঁহু, ওই কথাটি শুনব না। গত পাঁচ বারের অভিজ্ঞতায় দেখেছি মানুষ ভাত না খেয়ে মাছগুলোই খান

এবারে পদের ব্যখ্যান দিই। মোট পদ সাত রকম। তার মধ্যে ইয়া বড়কা বড়কা পিস (কমপক্ষে ৭০-১০০ গ্রাম, মাছটার ওজন হবে ৮০০-১০০০ গ্রাম) থাকবে পাঁচ পিস। কপাল ভালো থাকলে ডিম ওলা পিসও জুটতে পারে। এই পাঁচ পিসের পদ হবে – স্রেফ ভাজা, পাতুরি, দই ইলিশ, নারকেল ইলিশ, রসুন ইলিশ। ওই দ্যাখ, রসুন ইলিশের নাম শুনেই চোখ গেল কুঁচকে। হয়, হয়। ওড়িয়া ডিশ, নাম ‘বেসারা’। এতো গেল পাঁচ পদ। তারপর থাকছে, ইলিশ মাছের মাথা দিয়ে কচুর শাক, ইলিশ মাছের টক – চালতা, সর্ষে দিয়ে। তাহলে মেনুটা হল এই রকমঃ প্রথমে শুরু করুন মাছের তেল দিয়ে এক পিস মাছ ভাজা, সাথে কাঁচা ডুমো পেঁয়াজ আর মাছের তেলে হাল্কা করে ভাজা কাঁচা লঙ্কা। এর সাথে মেখে নিন কুঁচোন ধনেপাতা। তারপর মুগের ডাল আর সাথে কচুর ঘন্ট। এরপর পর পর পড়বে পাতুরি, দই ইলিশ, নারকেল ইলিশ আর বেসারা। টকটা হবে মাছের ল্যাজা দিয়ে। খাওয়ানো হবে সম্পূর্ণ মাটির বাসনে (থালা, গ্লাস, বাটি ইত্যাদি, একবারই ব্যবহারযোগ্য)।

এই অনুষ্ঠানে যোগদানে বয়সের কোন বাধা নেই। যারা বয়সে প্রবীণ নন তাঁরা এই অনুষ্ঠানে যোগদানের মাধ্যমে ‘প্রবীণদের আবাসন’ কেমন দেখতে হয় তা দেখে ও চেখে নেওয়ার সুযোগ পাবেন।  

এবার খরচের কথায় আসা যাক। খরচ দু ভাবে হিসাব করা হয়েছে। এক, যাঁরা খাওয়া দাওয়ার পাট চুকিয়ে বাড়ি মুখো হাঁটা দেবেন। আর দুই, যাঁরা রাতটা আমাদের আবাসনে কাটিয়ে পরের দিন ব্রেকফাস্ট খেয়ে বাড়ি ফিরবেন। যাঁরা শুধুমাত্র দিন কাটিয়ে খাওয়া শেষে বাড়ি ফিরবেন, তাঁদের ক্ষেত্রে ধার্য্য হয়েছে ১০০০ টাকা মাথা পিছু। আর যাঁরা রাত কাটাবেন তাঁরা দেবেন – একজন হলে ১৫০০ টাকা আর দুজন একসাথে হলে ২৫০০ টাকা। একজন যাঁরা রাত কাটাবেন তাঁদের ঘরে আরেকজনকে শেয়ার করতে হবে। দুজন একসাথে নাম নথিভুক্ত করলে একটি আলাদা ঘর পাবেন। রাত কাটানোর সুযোগ একমাত্র প্রবীণ/ প্রবীণারাই পাবেন। তবে কোন প্রবীণের স্ত্রী বা অন্য সঙ্গী (যেমন নাতি, নাতনি) অপ্রবীণ হলে অসুবিধা কিছু নেই।

এই অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণ করলে আপনার অনেকগুলো লাভ। ইলিশের অনেকরকম পদতো খাচ্ছেনই, সাথে আমাদের আবাসন ঘুরে দেখার সুযোগ। যাঁরা অনেকদিন ধরে আসব আসব করছেন, তাঁদের এই ফাঁকে দেখা হয়ে যাবে। এবারে ভাবুন, দশটায় এসে কি করবেন? খাওয়া তো বেলা একটায়। এক কাজ করুন, বগলে করে কবিতার খাতা, গানের খাতা নিয়ে আসুন – লড়িয়ে দিন, আর বাহবা কুড়িয়ে নিয়ে বাড়ি যান। এর ফাঁকে সুদৃশ্য মাটির ঘটিতে (পাতি ভাঁড় নয়, ১৫০ মিলির সুন্দর কারুকাজ করা ঘটি, দেখেছি অনেকে চা খাওয়ার পরে এদিক ওদিক তাকিয়ে ঘটিটা ব্যগস্থও করেন)দেশী কুকিজ দিয়ে এলাচী চায়ে চুমুক দিন। এই সব করতে করতে এর ওর সাথে ভাব জমান আর নতুন বন্ধু পাতান। তারপরে হোয়াটস্যাপে মেসেজ চালাচালি করে বন্ধুত্বটা মজিয়ে ফেলুন।

খুব গাদা গুচ্ছের ভিড় হোক, এটা আমাদের না-পছন্দ। জনা পনের-কুড়ি হলেই কাফি; তাহলে ব্যপারটা ঘরোয়া থাকবে। না হলে অন্যান্য ইলিশ উৎসবের মতো টিকিট কেটে লাইন দিয়ে একপেট খেয়ে বাড়ি ফেরার মতো হয়ে যাবে। মাথায় রাখুন, শুধু পেটে নয়, মনেও যেন কিছু নিয়ে ফিরতে পারেন। আর এটাই আমাদের তৃপ্তি।

যাঁরা ইচ্ছুক, তাঁরা ফোনে, হোয়াটস্যাপে, মেল-এর মাধ্যমে যোগাযোগ করুন আগাম টাকা পাঠানোর জন্য। টাকা ব্যাঙ্কের মাধ্যমে পাঠাতে হবে আগাম টাকা না পাঠালে আড়ি। 9330843394 হোয়াটস্যাপ, 8902043394, thikana_shimla@yahoo.co.in 

যাঁরা  ডেবিট কার্ড, ক্রেডিট কার্ডের মাধ্যমে অনলাইনে টিকিট কাটতে চান, তাঁরা দয়া করে নীচের লিঙ্কে ক্লিক করুনঃ
https://allevents.in/ashoknagar%20kalyangarh/ilish-utsav-2018/80002040164700